রাত ১২ টা বাজে,
সেই কখন থেকে ওর ফোনের অপেক্ষায় আছি ,আজ ফোন করলে কোনো কথাই বলবো না.ওর সাথে কথা বলা ছাড়া আমার যেন আর কোনো কাজ নেই.........বলতে না বলতেই ফোনটা বেজে উঠলো ,
=হেল্লো ?
=কি ?
=রাগ করেছ?সরি!হয়েছে কি.......
=আমি কোনো explanation চাইনি
=শুননা please !মা আমার রুম এ বসে ছিল তাই ফোন দিতে পারিনি,কি?রাগ কমেছে?
=না
=একটা কথা শুনলে তোমার রাগ কমে যাবে i love you,i love you like hell.হ্যালো শুনতে পাচ্ছ ?হললো?
বুকের ভিতর হৃদপিণ্ডটা বোধ হয় দুটো বিট মিস করলো!কপাল ঘামতে সুরু করলো ,মনে হলো পৃথিবীটা দুলতে শুরু করেছে
=হেললো?কি হলো কিছু বলছ না যে,শুনা যাচ্ছে না?
=যাচ্ছে
=হা:হা:তোমার ভালবাসার কাছে হার মানলাম বুঝলে ?তোমাকে ভালবাসা ছাড়া আমার আর কোনো পথ খোলা নেই.
=ও
=সুধু 'ও'?আচ্ছা থাক তুমি খুব ক্লান্ত এখন লক্ষী মেয়ের মত ঘুমাও,কাল সকালে কথা বলবো .কেমন ?
=good night
=good night
দু মাস পর
হাসপাতালের সাদা ধবধবে একটা বিছানায় শুয়ে আছি,বাবা -মা বিছানার পাশে বসে,আমি ভিতরে ভিতরে অধর্য হয়ে উঠছি .কাল আমার স্টমাক ওয়াশ করা হয়েছে অথচ বাবা-মা এখনো বিছানার সামনে থেকে নড়ছেন না .উনারা না গেলে শুভর সাথে কথা বলবো কিভাবে.... মার সামনে কপট রাগ দেখিয়ে বললাম 'মা-বাবা ,তোমরা এখন বাইরে যাও আমাকে একটু ঘুমুতে দাও.মা চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন 'মাগো,মা না হয় একটু রাগ করেছি তাই বলে তুই সুইসাইড করতে চাইলি?পুলিশ এসে আমার জিগ্গেসাবাদ করেছে ,আমাদের মান সম্মান সবতো গেল'.আমি হাতের অঙ্গুলগুলোর দিকে তাকিয়ে আছি,মনে মনে বললাম'আমাকে ক্ষমা কর মা,আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাইনি কিন্তু শুভো আমাকে খব কষ্ট দেয় ,এই কান্ডটা না করলে ও ঠিক এ ঈদ এ গেরামের বাড়ি চলে যেত তাহলে ওকে ছাড়া আমি কিভাবে ঈদ করতাম মা?তুমিই বল?
ফোন টা বাজছে ......
=হেল্লো !!
=বল
তুমি নাকি সুইসাইড করতে চেয়েছ ?এসব পাগলামির মানে কি?
=মানে তুমি বোঝো না?
=আই আম রিয়েলি সরি ,রিয়েলি রিয়েলি সরি.আর কোনদিন তোমার কথে না করবনা,তোমার সথে রাগা রাগী করবনা ,please আমাকে ক্ষমা কর.
মনে মনে প্রমোদ গুনলাম 'বোকা ছেলে তোমাকে ভালবাসা ছাড়া আমার আর কোনো রাসতা আছে?চোখের পানিটা আলতো করে মুছে নিয়ে বললাম 'তাহলে ঈদএর দিন সকাল বেলা আমার বাসার নিচে চলে এস.
ছয়মাস পর
সেই সকাল থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি ,আজবতো ছেলেটা!ফোন ই ধরছেনা.ফোন বেজে যাচ্ছে তো যাচ্ছে .........
=হেললো?কি বেপার? কি হয়েছে?২৫ মিস কল !আমি তো class এ ছিলাম ফোন পিক করতে পারিনি,
=হয়েছে ,হয়েছে ,কোনো বাহানার দরকার নেই,আমি তোমার ইউনিভার্সিটির নিচে দাড়িয়ে আছি,নিচে এসো
=মানে ?তুমি এখানে আস্বা আমাকে আগে বলবানা?
=বললে কি surprize থাকত?তুমি তো ভারী..
=শুন শুন,আমি এখন কিছুতেই আসতে পারবনা আমাদের sir আমাকে কিছু কাজ দিয়েছেন এগুলা আজ ই শেষ করতে হে,please তুমি আজ চলে যাও,আরেকদিন মিট করব
=কোনো problem নেই,আমার হাতে সময় আছে,আমি অপেক্ষা করছি
=আরে!তুমি কি কথা বুঝো না?বললাম কাজ আছে তবু বলে অপেক্ষা করব আমার কাজ শেষ হতে হতে রাত হয়ে যাবে,এতক্ষণ থাকবা?থাকতে পারলে থাক.বলে এ কলটা কেটে দিল .আমি চোখের পানি মুছতে মুছতে ফোনটা ডাস্টবিন এ ফেলে দিলাম,promise করলাম ওর সাথে আর কোনো contact রাখব না.আজ আমি প্রথমবার শাড়ি পরেছিলাম ভেবেছিলাম আজ এ আমাদের প্রথম দেখাটা হবে ,ভালে হয়েছে দেখা না হয়ে.
রাত 10ta বাজে,বড্ড খারাপ লাগছে আচ্ছা ,একটা কল দিয়ে দেখব?না থাক..নাকি দেব?দোটানায় পরে গেলাম শেষ পর্যন্ত আর পারলামনা ফোনটা নিয়ে ওর নম্বর এ ডায়াল করলাম
=হেল্লো ...........
এক বছর পর
আজ শুভর জন্মদিন ,আজ ওর সাথে দেখা করতেই হবে.আজ ওর কোনো বাহানাই শুনবো না.তারাতারি ওকে ফোন করলাম
=হেল্লো ,শুভো জন্মদিন!
=thank you ,thanks a millon
=শুনো ,আজ কিন্তু দেখা করতেই হবে কোনো বাহানা শুনবনা
=শুনো মাহী,আজতো দেখা করা পস্সিব্লে না,আজ আমি ঢাকার বাইরে যাচ্ছি মাকে দেখতে
=কি?কাল রাতে যে কিছুই বললা না?
=বলবো বলবো করে আর বলা হয়নি .সরি
=আচ্ছা ঠিক আসে কিন্তু এবার ঢাকায় আসলে কিন্তু দেখা করতেই হবে,আমরা এখন পর্যন্ত কেউ কাউকে দেখিনি এভাবে কি সারা জীবন চলবে নাকি?
=না,না ঢাকায় এসে এ দেখা করব.
=promise ?
=promise ?
আরো দু মাস পর
কাল রাতে শুভর সাথে কথা বলার সময় বাবা শুনতে পেয়েছে.আজ সকালে সাফ সাফ বলে দিয়েচে তার পছন্দের ছেলেকেই আমাকে বিয়ে করতে হবে.শুভোকে কথাটা জানানো দরকার কিন্তু ফোন টা তো বাবা রেখে দিয়েছেন .কি করব?ভাবতে ভাবতেই আমার dicition নিয়ে ফেললাম ,শুভকে না হলে আমার চলবেনা .ও সারা আমার আর কেউ নেই.হাতের মুঠোয় শুভর ঠিকানাটা করে চেপে ধরলাম.বহু কষ্টে এটা যোগার করেছি ওর ফোন নম্বর tress করে,তারাতারি সবকিছু গুছিয়ে নিলাম
****************
অনেকক্ষণ ধরে বেল টিপছি ,কেউ দরজা খুলছে না,ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে আসছে.আমরা কেউ কাউকে এখন পর্যন্ত দেখিনি.কে জানে ও দেখতে কেমন হবে,কিন্তু মনে মনে সিধান্ত নিয়ে ফেললাম দেখতে যেমন ই হোক মানুষের মনটাই আসল,আর আমি জানি ওর মনটা শিশুদের মত.এসব ভাবতে ভাবতেই দরজা খুলে গেল,দরজা খুলেছে
একটা মেয়ে,বলাই বাহুল্য শুধু মেয়দের মত কাপড় পরা বিশাল শরীর ঠোটের ওপর গোফের রেখা. আবার শরীরের খানিকটা মেয়েদের মত
=শুভো আছে?
=আছে,আমি ই শুভো বলুন ?
শুনে পায়ের নিচে মাটি সরে গেল,এটাই তাহলে শুভর এতদিন দেখা না করার কারণ!!
=হেললো?মাডাম খারাপ লাগছে ?ডাক্তার ডাকব?
=না ,না আমি একদম ঠিক আছি,বলে বিশাল বাগটা টানতে টানতে সিরি দিয়ে নামতে লাগলাম.আসার সময় এলাকার এক দোকানদার থেকে জানলাম শুভো ছেলে হয়ে ই জন্মেছিল এরপর হরমোনাল চেঞ্জ হয়ে গেছে,শুনলাম চিকিত্সা শুরু হয়েছে
************************
সেদিন রাতে
বাবাকে একটু আগে জানিয়ে এসেছি তাদের পছন্দের কারণে আমি আমার ভালবাসা sacrifice করতে রাজি আছি.শুনে বাবা খুশি হয়ে ফোন টা ফেরত দিয়েছেন .ফোনটা ওপেন করতেই একের পর এক কল আর মাসাজ আসতে shuru করলো, সিমটা খুলে টয়লেট এ নিয়ে গিয়ে ফ্লাশ করে দিলাম তারপর কিনে আনা নতুন সিমটা লাগলাম .বাবার সেই বন্ধুর ছেলের ছবিটা আমার হাতে,পেছনে একটা ফোন নম্বর.ইস!আবার ভাব নিয়ে ছবি তোলা হয়েছে.....
=হেল্লো,আমি মাহী
=চিনতে পেরেছি,আমি হাসান,কেমন আছেন আপনি?
=ভালো,আমি কিন্তু আপনার ছবি দেখেছি.আপনি ভিশন মুডি
=তাই বুঝি?
=হা তাই.
কথা বলতে বলতে আমি ভুলে যাই শুভো নামের এক ছেলের সাথে আমার ভালবাসা ছিল যার সাথে আজ সকালে আমার পালিয়ে যাবার plan ছিল,সততি মানুষ কত বোকাই না হতে পারে!